ট্রান্সজেন্ডার ও হিজরার মধ্যে পার্থক্য কী?

ট্রান্সজেন্ডার ও হিজরার মধ্যে আমরা অনেকেই পার্থক্য করতে না পেরে এক ভেবে বসি। আদতে ট্রান্সজেন্ডার এবং থার্ডজেন্ডার-এর মধ্যে বেশ বড় ধরনের পার্থক্য বিদ্যমান।

একজন ট্রান্সজেন্ডার প্রেগনেন্ট হতে পারে এবং সন্তান নিতে সক্ষম, কিন্তু একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ যাকে আমরা হিজরা বলি তিনি এধরনের সেক্সুয়াল একভিটিস এবং সন্তান নিতে সক্ষম নন।

আর্টিকেলটিতে আমরা লিঙ্গ রূপান্তরকারী ট্রান্সজেন্ডার এবং হিজরা বা থার্ড-জেন্ডার এর মাঝে কি ধরনের পার্থক্য বিদ্যমান সেসম্পর্কে জেনে নিবো।

ট্রান্সজেন্ডার ও থার্ডজেন্ডার এর মাঝে পার্থক্য

ট্রান্সজেন্ডার ও হিজরার মধ্যে পার্থক্য : Transgender বনাম Third Gender

যখন কোনো সন্তান নির্দিষ্ট লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে জন্ম নেয় (পুরুষ বা মেয়ে) কিন্তু পরবর্তীতে বডি গঠনশেলী, আচার-আচরণ বিপরীত লিঙ্গের মতো হয়। অর্থাৎ জন্মগত লিঙ্গ পরিচয় এবং আইডেন্টিক্যাল পরিচয় ভিন্ন হতে শুরু করে।
তখন লিঙ্গ পরিবর্তন করে নেওয়ার মাধ্যমে এই সমস্যা মোকাবেলা করা যায়। এদেরকে বলা হয় ট্রান্সজেন্ডার ( Transgender ) বা লিঙ্গ রূপান্তরকারী।
ট্রান্স জেন্ডার লিঙ্গ পরিবর্তন করার পর অন্য কোনো জটিলতা না থাকলে সন্তান ধারণ করতে পারে। এমন অনেক রেকর্ড রয়েছে, যারা ছেলে ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে লিঙ্গ পরিবর্তন করে সন্তান ধারণ করেছে।
অন্যদিকে, কিছু সন্তান জন্মের সময়ই কোনো লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে জন্মায় না। এরা দেখতে কিছুটা মেয়েদের মতো হলেও শারীরিকভাবে ছেলেদের মতো শক্ত ও পেশীবহুল দেহের অধিকারী হয়, এদেরকে থার্ড জেন্ডার বা তৃতীয় লিঙ্গ বলা হয়। দক্ষিন এশিয়ায় এরা হিজড়া নামেও পরিচিত।
রাজা বাদশাহদের আমলের বিভিন্ন বই কিংবা সিনেমায় খোজা নামটি শুনে থাকবেন। এই খোজা বলতে একধরনের পুরুষ শ্রেনীকে বুঝায়, যাদের শুক্রাশয় অপসারণ করে দেওয়া হয়েছে, অর্থাৎ সার্জারী করে যৌনসঙ্গমে অক্ষম করে তোলা কোনো পুরুষকে খোজা বলে।
হারেমের মাঝে মেয়েদের সাহায্য করতে পুরুষ দরকার হতো, কিন্তু পুরুষ মেয়েদের জন্য অনিরাপত্তার কারণ হতে পারে, এজন্যই এধরনের খোজা বানানোর প্রচলন ছিল।

শেষ কথা

তাহলে আমরা ‍জানলাম হিজড়া এবং ট্রান্সজেন্ডার এক নয়, তাদের মাঝে পার্থক্য বিদ্যমান। তৃতীয় লিঙ্গ হলো লিঙ্গ পরিচয়হীন ব্যক্তি, অন্যদিকে ট্রান্স জেন্ডার হলো লিঙ্গ পরিবর্তন করা কোনো পুরুষ বা মহিলা।
বর্তমানে চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নতির কারনে এখন কেউ চাইলে, স্বাভাবিক লিঙ্গ পরিচয় এবং আইডেন্টিক্যাল বৈশিষ্ট্য ঠিক থাকার পরেও জেন্ডার পরিবর্তন করে নিতে পারছেন।
তবে সম্পূর্ণ বৈশিষ্ট্য পেতে দীর্ঘদিনের প্রক্রিয়া দরকার হয়। কিছুদিন পূর্বে প্রথমবার এক স্বাভাবিক পুরুষ জেন্ডার পরিবর্তন করে গর্ভধারণ করে এবং বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতেও সক্ষম হয়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *