জোয়ার ভাটা কেন হয়

জোয়ার ভাটা কেন হয়?

জোয়ার ভাটা কেন হয় : ১৭ শতকের মাঝামাঝি সময়ে, গ্যালিলিও প্রস্তাব করেছিলেন যে, পৃথিবী সূর্যের চারপাশে প্রদক্ষিণ করার সময় জলের গতির কারণে জোয়ারের সৃষ্টি হয়। গ্যালিলিওর ভুল করেছিলেন এমন বিরল ঘটনাগুলোরর মধ্যে এটি একটি ছিল। তার জার্মান প্রতিদ্বন্দ্বী জোহানেস কেপলার জোয়ার ভাটার পিছনের কারণের খুব কাছাকাছি ছিলেন। প্রাচীন পর্যবেক্ষণ এবং পারস্পরিক সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে, কেপলার ভেবেছিলেন চাঁদ অবশ্যই জোয়ার সৃষ্টি করে। কিন্তু কেপলারের তত্ত্ব প্রতিদিন একটি জোয়ার ব্যাখ্যা করতে পারে। কয়েক দশক পরে, আইজ্যাক নিউটন তার বিখ্যাত প্রিন্সিপিয়া গ্রন্থ প্রকাশ করেন। বইটি মাধ্যাকর্ষণ সূত্র বর্ণনা করার জন্য সবচেয়ে বিখ্যাত ছিল, এবং এই একই সূত্র অবশেষে joar vata kno hoy তা ব্যাখ্যা করেছিল, চলুন আমরাও তবে জোয়ার ভাটা আসলে কেন কিভাবে হয়, তা জেনে নেই।

 জোয়ার ভাটা কেন হয়?

জোয়ার ভাটা কেন হয়
যখন মহাকর্ষের প্রভাবের কথা আসে, তখন আমাদের তিনটি প্রধান বিষয়কে বিবেচনা করতে হবে; পৃথিবী, চাঁদ এবং সূর্য। আসুন প্রথমে শুধু পৃথিবী এবং চাঁদ সম্পর্কে চিন্তা করি। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি চাঁদকে নিজের দিকে টানছে। চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তিও পৃথিবীকে টানছে। ফলস্বরূপ, তারা একে অপরের চারপাশে কক্ষপথে ঘুরছে। আর এই পরস্পর টানাটানির কারণেই পৃথিবী ও চাঁদ বৃত্তাকার না হয়ে গোলক আকৃতি ধারণ করেছে।

অন্যদিকে পৃথিবী সমুদ্রের একটি পাতলা স্তর দ্বারা আবৃত, যা বিকৃত করা খুব সহজ। চাঁদ পৃথিবীকে নিজের দিকে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করার সাথে সাথে সমুদ্র তার দিকে ছুটে আসে। ধরে নেই, এখন রাত ১২টা বাজে, এবং আমরা পৃথিবীর ক নামক সমুদ্র বিচে জোয়ার দেখলাম।

আমরা নিশ্চয়ই জানি, পৃথিবীও দিনে একবার নিজের অক্ষে ঘুরছে। তাই প্রথম জোয়ার আসার ৬ ঘন্টা পর চাঁদ পৃথিবীর সেই ক স্থান থেকে ১/৪ অংশ দূরে সরে এসেছে। ৬ ঘন্টা আগে চাঁদ পৃথিবীর ক স্থানের সাথে সোজাসুজি ছিল, কিন্তু চাঁদের অবস্থান বর্তমানে খ স্থানে, যা ক স্থানের সাথে ৯০ ডিগ্রী কোণ করে অবস্থিত। তাই, চাঁদের টান এখন অন্য দিকে থাকায় ক স্থানের পানি চাঁদের আকর্ষনে সেই দিকে ধাবিত হবে। অর্থাৎ, খ স্থানে জোয়ার এবং ক স্থানে ভাটা সৃষ্টি হবে।

জোয়ার ভাটা কেন হয় তা তো জানলেন, দিনে দুইবার জোয়ার ভোটা কিভাবে হয় বলুনতো।

আরেকটি উচ্চ জোয়ার আসে কিভাবে? এই জোয়ারও মাধ্যাকর্ষণ দ্বারা সৃষ্ট হয়, কিন্তু একটি ভিন্ন উপায়ে কাজ করে। মনে রাখবেন চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে কক্ষপথে রয়েছে এবং সেই কক্ষপথ গতি একটি বাহ্যিক শক্তি তৈরি করে।

গাড়িতে থাকার কথা ভাবুন, যখন গাড়ি উচ্চ বেগে গতিপথ পরিবর্তনের জন্য বাঁক নেয়, তখন আমরা গাড়ির বাইরের দিকে যেতে চাপ অনুভব করি, যা কেন্দ্রবিমুখী বল হিসেবে পরিচিত।

সমুদ্রও একই ধরনের অভিজ্ঞতা অনুভব করে। যখন চাঁদের আকর্ষণে একদিকে ধাবিত হচ্ছে, অন্যদিকে পৃথিবীর নিজ ঘূর্ণনের কারণে বাঁকও নিতে হচ্ছে, তখন তার কেন্দ্রবিমুখী বল অনুভব করে এবং সেইদিকেও কিছুটা ধাবিত হয়।

যার কারণে পৃথিবীর ক স্থানে আমরা যখন মুখ্য জোয়ার অনুভব করছি, খ স্থানে ভাটা আসবে, সেইসাথে গ স্থানে গৌণ জোয়ার দেখা দিবে।

একইভাবে ১২ ঘন্টা পর যখন চাঁদ এবং গ স্থান মুখোমুখি অবস্থানে আসবে, তখন সেখানে মুখ্য জোয়ার হবে, এবং আমাদের ক অবস্থানে গৌণ জোয়ার আসবে।

সোজা কথায়, পৃথিবীতে জোয়ারের কারণ কি? মাধ্যাকর্ষণ শক্তি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Share Buttons and Icons powered by Ultimatelysocial