0 (শূণ্য) কি জোড় না কি বিজোড়? 0 একটি জোড় সংখ্যা। কোন পূর্ণসংখ্যা জোড় হওয়া বলতে কী বোঝায়, তা ব্যাখ্যা করার জন্য বেশ কিছু উপায় রয়েছে এবং 0 সংখ্যাটি এরকম সমস্ত সংজ্ঞাই সিদ্ধ করে:- 0, ২ এর গুণিতক, ২ দিয়ে বিভাজ্য এবং নিজের সাথে একটি পূর্ণসংখ্যার যোগফলের সমান। এই সংজ্ঞাগুলি কেবল শূন্যের জন্যই ব্যতিক্রমী ভাবে প্রযোজ্য নয়, বরং এগুলি জোড় সংখ্যার যোগফল ও গুণফলের সাধারণ নিয়ম দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়।
0 (শূণ্য) কি জোড় না কি বিজোড়?
জোড় সংখ্যা গুলির মধ্যে 0 কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। 0 জোড় পূর্ণসংখ্যার পরিচয়সূচক উপাদান, এবং এটি পর্যায়ক্রমে আসা সকল উপাদানের ভিত্তি। শূন্যের জোড় হবার প্রবণতার সরাসরি প্রয়োগের প্রমাণ আছে এবং এর কাঠামো জোড় সংখ্যার অনুরুপ। সাধারণভাবে, ০ সকল পূর্ণ সংখ্যা দ্বারা বিভাজ্য, যার মধ্যে দুই এর সকল ঘাত আছে। ফলে 0 সকল সংখ্যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জোড়।
0 ধনাত্মক না ঋণাত্মক তা নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকলেও একে অঋণাত্মক (non negative) ধরা হয়।
০ কেন জোড়:-
জোড় সংখ্যা’র স্ট্যান্ডার্ড সংজ্ঞাটি সরাসরি 0 প্রমাণ করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। কোন সংখ্যাকে জোড় বলা হয় যদি তা পূর্ণসংখ্যা ২ এর গুণিতক হয়। শূন্য দুই এর একটি গুণিতক, অর্থাৎ ০ × ২, সুতরাং শূণ্য জোড়। উদাহরণসরূপ, ১০ জোড় হবার কারণ এটা ৫ × ২ এর সমান। 0<10^-99.99999999999999999…………………
০ একটি ভিন্ন সংজ্ঞা কেন নয়:-
গাণিতিকভাবে “জোড় সংখ্যা” শব্দের অর্থ “পূর্ণসংখ্যা যা ২ এর গুণিতক” হল একটি কনভেনশন। “জোড়” শব্দটিকে সাধারণভাবে “দুই এর অশূণ্য গুণিতক” বলে ধরা যায়। শেষোক্ত সংজ্ঞানুসারে ০ জোড় সংখ্যা হবে না। ১ম সংজ্ঞাকে ২য় টির আগে প্রাধান্য দেবার কারণ যুক্তিহীন নয়, এটি জোড় ও বিজোড় সংখ্যা নির্বাহে বীজগাণিতিক নিয়ম অধীনে গৃহীত হয়।
সব থেকে সংগতিপূর্ণ নিয়ম যোগ, বিয়োগ ও গুণ অন্তর্ভুক্ত:-
জোড় ± জোড় = জোড়
বিজোড় ± বিজোড় =জোড়
জোড় × পূর্ণ সংখ্য = জোড়
এই নিয়মাবলীর বামপক্ষে উপযুক্ত মান বসিয়ে ডান পক্ষে শূণ্য আনা যায়:-
- ৪ + (-৪) = ০
- ৩ – ৩ = ০
- ৬ * ০ = ০
উপর্যুক্ত নিয়মগুলো ভুল বলে প্রমাণিত হবে যদি ০ জোড় সংখ্যা না হয়, অন্তত তাদেরকে কিছুটা হলেও পরিবর্তিত করতে হবে। উদাহরণ স্বরুপ, থমসন প্রকাশিত একটি বই অনুযায়ী, জোড় হল সেই সকল যা ২ এর গুণিতক, কিন্তু ০ “জোড়ও নয়, বিজোড়ও নয়”। এই বইয়ের বর্ণণা কিছুটা ব্যতিক্রমধর্মী:-
- জোড় ± জোড় = জোড় (বা ০) ।
- বিজোড় ± বিজোড় = জোড় (বা ০)
- জোড় × অশূণ্য পূর্ণসংখ্যা = জোড়
জোড় সংখ্যার সংজ্ঞার এমন পরিবর্তন এর নীতিকে পরিবর্তিত করে। ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যার নিয়ম গ্রহণ করে এবং এদের সাধারণ ধরে নিয়ে ০ এর জোড় হবার সাধারণ সংজ্ঞা গৃহীত হয়।
০ শব্দের বুৎপত্তি:-
০ কে আমরা ইংরেজিতে বলে থাকি জিরো। জিরো শব্দটি কিভাবে এসেছে আপনি যদি এবিষয়ে জানতে চান তবে লাইন বাই লাইন ভালভাবে পড়ুন ভারতীয় সভ্যতার নিকটে সভ্যতা ছিল সভ্যতা তখন মনে করা হতো সংস্কৃতিতে যা শূন্য হয় এইটা আরব দেশে হয় সাফাইরা যার কোন অর্থ নেই। সেই সাফাইরা শব্দটি গ্রসি থেকে রোমে পোঁছাই, অপভ্রংশ শব্দটি হয় জেফিরো। উক্ত জেফিরো থেকে আধুনিক ইংরেজি শব্দ আসে ০ বা জিরো।
০ এর মান কত ?
অংক শাস্ত্রে ০ এর কোনো মান নেই। কিন্তু কোন সংখ্যার পরে অথবা সংখ্যার ডান পাশে শূন্য এর মান বৃদ্ধি পায় তেমনি কোন সংখ্যার আগে 0 বসিয়ে তার মান অপরিবর্তিত থাকে।
তাই মোট কথাই বলা যায় ০ এর মান যদি কোন সংখ্যার আগে বসে তাহলে তার কোন মান থাকে না আর যদি কোন সংখ্যার সমান 1 এরপরে যদি 0 হয় তাহলে ০ এর মান বৃদ্ধি পায়।
০ এর আবিষ্কার কে?
০ এর আবিষ্কার হয়েছে ভারতীয় উপমাহাদেশে। ০ এর আবিষ্কারক হচ্ছে আর্যভট্ট। ০ আবিষ্কারের ফলে অংক শাস্ত্রের অনেক বিষয় গুলো সহজ হয়ে গিয়েছে।
আগের সময় গুলোতে বিভিন্ন ধরনের সভ্যতায় 1 থেকে 10 পর্যন্ত সংখ্যা ছিল। মেসোপটেমিয়া সভ্যতায় 1 থেকে 60 পর্যন্ত সংখ্যা গুলোকে বিভিন্ন অক্ষর দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে।
সেই সময় রোমান অক্ষর গুলো ব্যবহৃত হত। তার জন্য ০ সংখ্যার কোন প্রয়োজন ছিল না। আমরা যখন ০ দেখতে পায় তখন আমাদের বিশেষ বিশেষ অংক গুলো করতে অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।
আমরা ১ থেকে ৯ পর্যন্ত কয়টি সংখ্যা দিয়ে হাজার হাজার সংখ্যা লিখতে পারি। তবে ০ এর সাহায্যে অতি সহজে আমরা কোটি কোটি সংখ্যা লিখতে পারি।
যদি ০ আবিষ্কার না হতো তাহলে আমরা লক্ষ বা কোটির মতো সংখ্যা গুলো লিখতে পারতাম না। এছাড়া একক, দশকম শতক স্থানীয় মানের অংক দশমিক এর অংকে ০ অনেক সরলীকৃত করেছে।
শূন্যের যাত্রাপথ:-
০ কিভাবে সুদুর পাশ্চাত্যে পৌঁছিয়েছে এ বিষয়ে জানতে লেখাটি পড়ুন। আলবেরুনীর ভ্রমন বৃত্তান্ত থেকে জানা গিয়েছে ০ সংখ্যাটি লিখিত হত। সপ্তম শতাব্দীর সময়ে বিভিন্ন লিপিতে ০ সংখ্যাটি ছিল।
ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে ০ সংখ্যাটি জ্ঞান লাভ করে দুই আরবি গণিতজ্ঞ আল কিন্দির। মধ্যপ্রাচ্য থেকে ০ সংখ্যা ইউরোপে প্রচলিত হয়। ইংরেজি ভাষায় জিরো (0) শব্দটি ১৫৯৮ খ্রিঃ এর সময়ে দেখা যায়।
বাহ, এই বিষয়টি নিয়ে সত্যিই আগে ককনও ভাবী নাই। আপনি বেশ ভাল একটা তথ্য দিয়েছেন। যা আমার সাধারণ নলেজকে আরও সমৃদ্ধ করলো। আর্য ভট্ট যে শূন্য আবিষ্কার করেছিল তা জানা ছিল না। তিনি সত্যিই এক মহান কাজ করে গেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।