ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ করা হয় না কেন?

ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ করা হয় না কেন ? যে কারণে বন্ধ করা হয়না ট্রেনের ইঞ্জিন, এটার কারণ কি ? মানব সভ্যতার প্রথম আধুনিক বাহন হচ্ছে ট্রেন। আজকাল ট্রেন দেখেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। মোট কথা আমারা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো ভাবে ট্রেন দেখেছি।

কেউ বা নিজে ট্রেনে ভ্রমন করে আবার কেউবা অন্যের ট্রেনে ভ্রমনের ভিডিও দেখে। নতুবা কোথায় ট্রেনের ছবি দেখে। কিন্তু একটা বিষয় সবাই দেখলেও অনেকেই জানেনা ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ করা হয় না কেন। আমরা সব সময় দেখি ষ্টেশনে ট্রেন দাড়িয়ে থাকে অনেকক্ষণ তার পরেও ইঞ্জিন বন্ধ করা হয়না।তো আপনি হয়তো বুঝেই গেছেন আজ আমরা কথা বলবো ট্রেনের ইঞ্জিন কেন বন্ধ করা হয়না।

কেন বন্ধ করা হয়না ট্রেনের ইঞ্জিন এই প্রশ্ন করলে উত্তর দেওয়া একটু ঝামেলা হবে। কারন ট্রেনের ইঞ্জিন যে একেবারেই বন্ধ করা হয়না তেমনটা নয় । তবে ষ্টেশনে ট্রেন থামলে ইঞ্জিন বন্ধ না করার অনেক গুলো কারণ রয়েছে।
তার মধ্যে প্রধান কিছু কারণ আমরা আজকের আলোচনায় তুলে ধরবো।

ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ করা হয় না কেন?

  • ১। ষ্টেশনে ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ করা হয়না কারন ট্রেনের ইঞ্জিন একবার বন্ধ হলে অনেক্ষন লেগে যায় পুনঃরায় স্ট্রাট বা চালু করতে। কারণ ট্রেনের ইঞ্জিন বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় প্রচুর জালানী ব্যবহার করতে হয়। আর এমতাবস্থায় যদি সিগনাল ছেড়ে দেয় তাহলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই ষ্টেশনে ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ করা হয়না।
  • ২। ট্রেনের ইঞ্জিন গুলোতে এয়ার কম্প্রেসার ব্রেক থাকে। এগুলোতে সঠিক কাজ করার জন্য বাতাসে প্রচুর কম্প্রেসার বা প্রেসার প্রয়োজন পড়ে। আর যদি ইঞ্জিন চালু না থাকে তাহলে এয়ার কম্প্রেসার গুলো কাজ করেনা সঠিক ভাবে ব্রেকও হবেনা। কারণ ব্রেকে সঠিক ভবে কাজ করার জন্য প্রধান উপকরণ হলো কম্প্রেসার । তাই ডিজেল চালিত ইঞ্জিন চালু রেখে ব্রেক ঠিকমতো কাজ করার জন্য কম্প্রেসার বা প্রেসার নেওয়া হয়।
  • ৩। ডিজেলের ইঞ্জিন চালু করার জন্য প্রয়োজন সঠিক সময় পূর্ন চার্জ । কারণ বেটারি পুরো চার্জ না থাকলে ডিজেলের ইঞ্জিন চালু হবেনা। তাছাড়া ট্রেনের অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজ যেমন লাইট, ফ্যান, হর্ণ, সিগনাল, সহ অনেক গুলো জিনিষ চলে ব্যাটারির চার্জের মাধ্যমে। যার ফলে ব্যাটারীর সঠিক চার্জ থাকেনা। এজন্য ডিজেলের ইঞ্জিন চালু রেখে ব্যাটারী চার্জ দেওয়া হয় আর স্বল্প সময়ের জন্য বা যে কোনো ষ্টেশনে ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ করা হয়না।

ডিজেলের ইঞ্জিন চালু করার জন্য প্রয়োজন পরে প্রচুর তাপমাত্রা। আর এই তাপমাত্রাকে প্রচুর মাত্রায় নিতে হলে যে জালানী প্রয়োজন হয় তার তুলনায় অনেক কম জালানী ক্ষয় হয় ইঞ্জিন চালু থাকলে। তাই ট্রেন ষ্টেশনে দাড়িয়ে থাকলেও রেলগাড়ি বা ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ করা হয়না।

আরও পড়ুনঃ বাস ভ্রমণে ঘুম আসে কেন?

মুলকথা হচ্ছে ট্রেনের ইঞ্জিন চালু থাকলে যে পরিমান জ্বালানী ক্ষয় হবে তার তিন গুন বেশি জালানি লাগবে একবার ইঞ্জিন চালু করতে। তাছাড়াও উপরে কিছু কারণতো বললাম ট্রেনের ইঞ্জিন চালু রাখার ব্যাপারে।

ট্রেন কিভাবে চলে | ট্রেনের ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে

পূর্বে রেলপথে গতিশক্তির জন্য মানব শক্তি, ঘোড়ার শক্তি, মাধ্যাকর্ষণ বা স্থির ইঞ্জিন ব্যবহৃত হতো। লোকোমোটিভ উদ্ভাবণের পর থেকে বর্তমানে কাঠ, কয়লা, পেট্রোলিয়াম বা প্রাকৃতিক গ্যাস, গ্যাস টারবাইন কিংবা বিদ্যুত শক্তি ব্যবহার করে ট্রেন চলাচল করে।

রেল পরিবহনের বাহন বা ট্রেনের চলার ক্ষমতা সরবরাহকারী ইঞ্জিনকে লোকোমোটিভ বলা হয়। এটি একটি আত্ম-চালিত যানবাহন, যা যাত্রীবাহী ট্রেনে অধিক ব্যবহৃত হয়। তবে মালবাহী ট্রেনের দুর্লভ প্রকৃতির কার্গোস্প্রিন্টার এবং আয়রন হাইওয়ে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত একটি লোকোমোটিভ একটি ট্রেনকে সামনে থেকে টানে। তবে বর্তমানে পুশ-পুল অপারেশন ব্যবহৃত হয়। যে পদ্ধতিতে ট্রেনের সামনে, বা পিছনে বা উভয় প্রান্তে এক বা একাধিক লোকোমোটিভ থাকে।

বর্তমানে রেলপথগুলোতে ডিপিইউ বা ডিস্ট্রিবিউটেড পাওয়ার পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে ট্রেনের সামনের দিকে একটি বা দুটি লোকোমোটিভ থাকে এবং এরপর ট্রেনের মাঝখানে আরেকটি লোকোমোটিভ থাকে যা সামনের লোকোমোটিভ থেকে দূরবর্তীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এগুলো একসাথে সম্মিলিতভাবে একটি ট্রেনকে এগিয়ে নেয়। কোনো লোকোমোটিভ পে-লোড বহন করতে সক্ষম হলে, এটিকে মাল্টিপল ইউনিট, মোটর কোচ, রেলকার বা পাওয়ার কার বলা হয়।

ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ করা হয় না কেন? এরকম আরো নতুন নতুন বিষয় জানতে এখনি শেয়ার করে আমাদের ওয়েব সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন । ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন কথা হবে আবারো অন্য কোনো নতুন টপিক নিয়ে।

1 thought on “ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ করা হয় না কেন?”

  1. Good post. I certainly appreciate this website. Continue the good work!

    Reply

Leave a Comment