চোখ উঠার কারণ কি? চোখ উঠা রোগের লক্ষণ কি?

চোখ উঠার কারণ কি? সাম্প্রতিক সময়ে চোখ উঠার সমস্যায় ছোট বড় সকলে ভুগছেন। ভাইরাস জনিত এ সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে গোলাপি চোখ (পিংক আইজ) বা কনজাংটিভাইটিস বলে।

চোখ উঠার কারণ কি?

ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, অ্যালার্জি, চোখে রাসায়নিকের প্রবেশ, চোখে কোনো কিছু ডুকলে।

চোখ উঠা রোগের লক্ষণ কি?

চোখে জ্বলা, চোখের ভিতরে অস্বস্হি, ব্যাথা। দিনের বেলা রোদের আলোতে বাহিরে গেলে চোখের যন্ত্রনা বেড়ে যায়। চোখ দিয়ে পানি পড়া ও লাল হয়ে ফুলে উঠা। ঘুম থেকে উঠার চোখের পাতা দুটো একত্রে রেগে থাকা। সাধারণত ৭-৮ দিনের মধ্যে উপসগগুলো কমে যায়। দৃষ্টি ঝাপসা হয় ও চোখের মণিতে সাদা দাগ পড়ে খালি চোখে দেখে বুঝা যায় না। এতগুলো উপসগ সকল রোগির ক্ষেত্রে দেখা নাও যেতে পারে।

চোখ উঠলে কি কি সতর্কতা অবলম্ভন করতে হয়?

যেসকল সাবধানতা অবলম্বন করে চলতে হবে তা হলো, ধুলাবালি আছে এমন জায়গায় না যাওয়া, আগুন থেকে দুরে থাকা, রোদের আলোতে কম বাহির হওয়া, ময়লা আবজনাযুক্ত স্যাতসেতেঁ স্হানে না যাওয়া, পুকুর বা নদীতে গোসল না করা, চোখের যত্নে কালো চশমা ব্যবহার করা, টেলিভিশন না দেখা ভালো।

আরো পড়ুন: আঙ্গুল ফোটালে শব্দ হয় কেন ? কি ক্ষতি হতে পারে আঙ্গুল ফোটালে ?

কি কি উপায়ে চিকিৎসা ও প্রতিরোধ করা যায়?

ভাইরাস জনিত এ রোগের তেমন কোন চিকিৎসা নেই। সাধারণত ৭-১০ দিন পর এমনিতেই সেরে যায়। আক্রান্ত ব্যাক্তি থেকে সব ছড়িয়ে পড়ার প্রতিরোধে যে বিষয় লক্ষ্য রাখা জরুরি:

  • ১. চোখের পানি বা ময়লা মুছতে আলাদা রুমাল ব্যাবহার করতে হবে।
  • ২. অপরিষ্কার রুমাল ব্যাবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • ৩. সব সময় পরিষ্কার পরিছন্ন থাকতে হবে।
  • ৪. কালো চশমা ব্যবহার করা বাহিরের ধুলোবালি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য।
  • ৫. বাহিরের পানি দিয়ে চোখে ঝাপটা না দেওয়া।
  • ৬. চোখের পাতা বেশি ফুলে গেলে বরফ দেওয়া যেতে পারে।
  • ৭. অপরিষ্কার হাতে যখন-তখন চোখ না চুলকানো।
  • ৮. চোখ উঠা রোগিদের বিছানা আলাদা রাখা।
  • ৯. চিকিৎসকের পরামশ নিয়ে ঔষুধ খাওয়া।

কুসংস্কার কি?

আক্রান্ত ব্যাক্তির চোখে চোখ রাখলে কনজাংটিভাইটিস বা চোখ উঠা রোগে আক্রান্ত হবে, এটা একটি ভ্রান্ত ধারণা।

অন্যান্য কারণ কি?

চোখের কনজাংটিভাইটিস রোগটি বাংলাদেশে পরিচিত ‘চোখ উঠা’ নামে। কিন্তু ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এ রোগের নাম হলো ‘জয় বাংলা রোগ’। এর মধ্যে জড়িয়ে আছে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের যোগসূত্র! ১৯৭১ সালে মহামারী আকারে পশ্চিম বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। রোগটি পুব বাংলায় চলা মুক্তিযুদ্ধের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসা বাঙ্গালি শরণার্থীদের কারণে ছড়িয়ে-ছিলো বলে এর নাম দেওয়া হয়েছিলো ’জয় বাংলা রোগ’!

আশাকরি চোখ উঠার কারণ কি সম্পর্কে পরিষ্কার একটি ধারণা পেয়েছেন। চোখ উঠা রোগের লক্ষণ কি? সম্পর্কে অন্য সকলকে জানাতে পোস্টটি শেয়ার করে দিন।

Leave a Comment