শহরের ছেলে মেয়ের হয়তো সেরকম সুযোগ হয়নি কিন্তু লজ্জাবতী গাছের পাতার সাথে খেলার লোভ গ্রামের কোনো ছেলে মেয়ে কি সামলাতে পেরেছে এখনো? কি মজাই না লাগতো লজ্জাবতী গাছের পাতার চুপসে যাওয়ার দৃশ্য দেখতে! ঠিক যেন নতুন বউ। গাছের প্রাণের পাশাপাশি লজ্জাও আছে তা আমরা ল্জ্জবতী গাছের নুয়ে পড়া দেখে বুঝতে পারতাম। কিন্তু কখনো কি আপনার মনে প্রশ্ন এসেছে, লজ্জাবতী গাছের পাতা ছুলে চুপসে যায় কেন?
লজ্জাবতী গাছের পাতা স্পর্শ করলে চুপসে যায় কেন?
লজ্জাবতী গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Mimosa pudica. লজ্জাবতী গাছের পাতা অনেক ছোট ছোট হয়। এরা আলো পেলে নিজেদের মেলে ধরে, অন্ধকারে আবদ্ধ করে রাখে। কিন্তু আলো থাকা অবস্থাতেও লজ্জাবতী গাছের পাতা কিংবা কোনো জায়গায় স্পর্শ করলে পুরো লজ্জাবতী গাছই নুয়ে পড়ে এবং পাতাগুলোও বন্ধ হয়ে যায়।
বিজ্ঞানীদেরও এই অনন্য বৈশিষ্ট্য ভাবিয়ে তুলেছিল। এরপর তারা বিভিন্ন পরীক্ষা করে আশ্চর্য্যজনক তথ্য খুঁজে পায়।
বিজ্ঞানীরা লজ্জাবতী গাছের পাতা চুপসে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলেছে, এই গাছের পাতার গোড়া সাধারণভাবে একটু ফোলা থাকে। যেখানে বড় বড় কোষ পাওয়া রয়েছে। এই কোষগুলোতে সাধারণ অবস্থায় পানি জমা রাখে এবং এজন্য পাতার গোড়া অতিরিক্ত ফোলা মনে হয়।
কোষগুলো যখন পানি দিয়ে ভরা থাকে, তখন লজ্জাবতী গাছের ডাটা সোজা থাকে এবং পত্রফলক উম্মুক্ত থাকে। অর্থাৎ লজ্জা পায়না।
কিন্তু যদি কেউ লজ্জাবতী গাছের পাতা ছোয়ার সাথে সাথে গোড়ার বড় বড় কোষ থেকে পানি বের হয়ে আরো পিছনের দিকের কোষে চলে যায়। জলের সাথে সাথে খনিজ লবনও বের হয়ে যায়।
জলের পরিমাণ কম হওয়ার সাথে সাথে চাপও কমে যায় এবং দাড়িয়ে থাকার শক্তি হারিয়ে ফেলে। তখন গাছের ডাটা দাড়িয়ে থাকতে নুয়ে পড়ে এবং পত্রফলক বন্ধ করে ফেলে।
লজ্জাবতী গাছের পাতা ছুলে দেখা যায় শুধুমাত্র সেই পাতা কিংবা ডাটাটি নুয়ে না পড়ে পুরো গাছই নুয়ে পরছে। এর কারন হিসেবে বিজ্ঞানীরা বলেন ‘অ্যাসিটাইল কোলিন’ জাতীয় রাসায়নিক পদার্থের প্রভাবে সামান্য সময়ের মাঝে পুরো দেহে একটা তড়িৎপ্রবাহ ছড়িয়ে পরে।