ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড এবং ভিসার মধ্যে পার্থক্য: ই-ক্যাশের যুগে ডেবিট কার্ড-ক্রেডিট কার্ডের একটি সোয়াইপে লেননদেন সম্পন্ন করা যাচ্ছে । এমনকি এক দেশ থেকে অন্য দেশের বিল পেমেন্ট ঘরে বসে করা সম্ভব হচ্ছে ডেবিট কার্ড-ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে । আমাদের দেশে যদিও ডেবিট কার্ড-ক্রেডিট কার্ড সেভাবে প্রচলিত নয় । তবে বর্তমানে আমাদের দেশেও ডেবিট কার্ড-ক্রেডিট কার্ডের জনপ্রিয়তা বাড়ছে । তবে আমরা অনেকেই ঠিকভাবে ডেবিট কার্ড-ক্রেডিট কার্ড এর পার্থক্য এবং ব্যবহার সম্পর্কে ভালভাবে জানিনা । তাছাড়া আরেকটি কার্ড নিয়ে আমাদের মনে প্রশ্ন য়েছে, ভিসা কার্ড চলুন তিনটি কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেই ।
ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড এবং ভিসা |
ডেবিট কার্ড কি ?
এটা হল আপনার কাছে নগদ টাকার মত । ধরুন আপনার ব্যাংকে ৫০০০০ টাকা আছে । এখনই টাকার দরকার । রাত হয়ে গেছে। কি করবেন? সমস্যা নেই। আপনার কার্ড নিয়ে এটিএম বুথে গেলেন। কার্ড ঘষলেন। টাকা পেলেন। সহজ হিসাব। অর্থাৎ, আপনার ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা যখন ইচ্ছা, যতবার ইচ্ছা ওঠানোর সুযোগ দেওয়া কার্ডটি হল ডেবিট কার্ড। আবার ডেবিট কার্ড আবার কয়েক প্রকার হয় । যেমন, লোকাল কার্ড, ইন্টারন্যাশনাল কার্ড ইত্যাদি।
সেভিংস (সঞ্চয়ী) কিংবা কারেন্ট (চলতি) অ্যাকাউন্টের গ্রাহকদের জন্য ব্যাংক থেকে ডেবিট কার্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া কর্পোরেট ব্যক্তিত্বদেরও ডেবিট কার্ড প্রদান করা হয় । এই কার্ডগুলি গ্রাহকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সাথে যুক্ত থাকে । আপার অ্যাকাউন্টে যদি ব্যালেন্স থাকে তাহলে ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে অনলাইন এবং অফলাইনে কেনাকাটা করতে পারবেন এবং অন্য কারও অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতেও পারবেন । বিভিন্ন ধরনের সেবা পেতে ডেবিট কার্ড ব্যবহার করা যায়, যে পরিমাণ টাকা আপনি খরচ করবেন, আপনার একাউন্ট থেকে ঠিক একই পরিমাণ টাকা সাথে সাথে কেটে নেয়া হবে ।
বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যাংক গুলোতে এই ডেবিট কার্ডের সেবা দেওয়া হয়। আপনারও একটি ডেবিট কার্ডের প্রয়োজন থাকলে, স্থানীয় একটি ব্যাংকে গিয়ে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের কপি বা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে একাউন্ট খুলে নিতে পারেন। তারপর ব্যাংক থেকে আপনাকে একটি ডেবিট কার্ড দেওয়া হবে। তবে একাউন্ট খোলার আগে জেনে নিতে হবে যে, সেই ব্যাংকে ডেবিট কার্ড সেবা দেওয়া হয় কিনা।
ক্রেডিট কার্ড কি ?
ক্রেডিট কার্ড হলো বন্ধুর থেকে টাকা ধার নিয়ে শপিং করার মতো। ক্রেডিট কার্ড আপনার একাউন্টের সাথে যুক্ত বা হিসাব নয় । যখন আপনি কোনো অর্থ প্রদানের জন্য ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন, তখন আপনার সেভিংস/কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে এই পরিমাণটি কেটে নেওয়া হয় না । ক্রেডিট কার্ড আপনাকে ক্রেডিটে (বাকীতে) লেনদেন করার সুবিধা দেয় । ক্রেডিট কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান আপনার প্রয়োজনে অর্থ প্রদান করে । ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীকে পরবর্তী বিল দেয়ার তারিখের মধ্যে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে উক্ত পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হয় । আপনি চাইলে তখন আপনার সেভিংস একাউন্ট থেকেও বিল দিতে পারেন । সময়মতো অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে উক্ত প্রতিষ্ঠান আপনার জন্য সুদ ধার্য্য করা হবে ।
যে সকল ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ডের সেবা দেওয়া হয়, সেখানে আপনার ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে একটি একাউন্ট খুলে নিতে হবে। তারপর সংশ্লীষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে নিজের কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।
ক্রেডিট কার্ড |
আপনার কার্ড একটা লিমিট দেওয়া থাকবে ধার বা খরচ করার । ধরুন, আপনি ৫০০০০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করেন । আপনার ক্রেডিট লিমিট ১০০০০০ টাকা/৪৫ দিন/১.৫%p.m । এর অর্থ হল, আপনি ১০০০০০ টাকা পর্যন্দ খরচ করতে পারবেন । ৪৫ দিন পর্যন্ত সুদমুক্ত ভাবে পরিশোদ করার সময় পাবেন । না দিতে পারলে প্রতি মাসে ১.৫% সুদ দিতে হবে, অর্থাৎ বছরে ১৮% সুদ দিতে হবে খরচের উপরে । এটাও লোকাল বা ইন্টারন্যাশনাল হয়ে থাকে ।
ভিসা কার্ড কি ?
ভিসা কার্ড |
ভিসা (visa) একটি কোম্পানীর নাম। ইন্টারন্যাশনালি কোম্পানিটি প্রায় সকল দেশে কার্ড সুবিধা দিয়ে থাকে । কোম্পানিটি সরাসরিিআপনাকে কোন কার্ড দিবে না । যে ব্যাংকে আপনার একাউন্ট রয়েছে সেই ব্যাংকের সাথে যুক্ত হয়ে আপনাকে সেবা প্রদান করবে । বাংলাদেশে প্রায় সকল ব্যাংকই ভিসা কার্ড ইস্যু করে । ভিসা কার্ড ডেবিট এবং ক্রেডিট দুই ধরনের কার্ড সেবাই দিয়ে থাকে ।
বিষয়টা অনেক্টা জটিল ছিল। এখন ক্লিয়ার।ধন্যবাদ আপনাকে