সাইকেল, রিক্সা, মোটরসাইকেল কিংবা বাস-ট্রাক অথবা অন্য কোন যানবাহন অথবা ফুটবল, এদের মধ্যে একটা বিষয় কমন, সেটা হলো- এইসব কিছুকেই কিছুদিন পরপর পাম্প করতে হয় । কিন্তু, প্রশ্ন হলো- কেন বারবার পাম্প করতে হয়, চলুন জেনে নেই, কেন চাকা বা ফুটবলের হাওয়া ফুরিয়ে যায় ।
যাদের বিজ্ঞানের সাথে পরিচয় আছে, তারা জানেন- বায়ু উচ্চ চাপের স্থান থেকে নিম্ন চাপের স্থানে চলে যায় । কিন্তু যদি বায়ু বের হওয়ার বা ভেতরে প্রবেশের রাস্তা না পায়, তবে এই গমন সম্ভব না ।
বল বা চাকার মধ্যে আমরা কম জায়গায় অধিক বায়ু প্রচন্ড চাপ দিয়ে রাখি । অর্থাৎ, বল এবং চাকার টিউবের মাঝে বায়ুর চাপ প্রাকৃতিক চাপের চেয়ে কয়েকগুন বেশি থাকে । সুতরাং, যদি সুযোগ পায়, বল বা টিউবের বায়ু তার বেশি চাপের জায়গা থেকে বের হয়ে প্রকৃতিতে চলে আসবে ।
ফুটবল ছবি মডেল – আসিফ |
এখন আপনার-আমার মনে প্রশ্ন আসে, বল বা টিউবে তো লিকেজ নেই, তাহলে বায়ু যাবে কিভাবে ?
না, লিকেজ যদিও নেই, কিন্তু বাইরে থেকে রাবারকে দেখতে নিরেট মনে হলেও ভিতর ছোট ছোট ছিদ্র থাকে রাবারে, যেটা বন্ধ করা এখনো সম্ভব হয়নি । মাইক্রোস্কোপিক ভিউ দেখলেই বুঝতে পারবেন । কপিরাইট মুক্ত ছবি না পাওয়ায় দেখাতে পারছি না, আপনি চাইলে এখান থেকে দেখতে পারবেন ।
ছিদ্র থাকার কারণে বায়ু রবারের পর্দা বা ঝিল্লি ভেদ করতে পারে । তাই উচ্চচাপের স্থান থেকে পর্দা ভেদ করে বায়ু নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হয় ।
বাতাস বের হয়ে আসে পদ্ধতিকে সলিউসন-ডিফিউসন পদ্ধতিতে । অর্থাৎ, ভেতরের বাতাস টিউবের দেওয়ালের সংস্পর্শে এসে রাবারের মধ্যে দ্রবীভূত হয় অথবা কঠিন এবং গ্যাসের দ্রবন তৈরী করে । এরপর বাতাস গহ্বরের মধ্যে (ছোট ছোট ছিদ্রে) জমা হয় । পুনরায় রবারের মধ্যে দ্রবীভূত হয় এবং পাশ্ববর্তী গহ্বরের মধ্যে জমা হয় । এই ভাবে বাতাস বা বায়ু রবারের একেকটি দেয়াল ভেদ করে বাইরে বেরিয়ে আসে ।
কি হারে বাতাস বের হবে সেটা কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে । যেমন- পরিবেশের তাপমাত্রা, টিউব বা ব্লাডারের পুরুত্ব, এর ভেতর থাকা বাতাসের চাপ, টিউব তৈরীতে কি ধরণের ফিলার পদার্থের ব্যাবহার হয়েছে ইত্যাদি ।
স্ক্যানিং ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপে তোলা ছবিতে রবারের মধ্যে থাকা পোর বা গহ্বর।
সুন্দর বিষয়! ভালো লাগলো জেনে।
আপনার মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করবে।