ছোটবেলা প্রথমবার পৃথিবীর মানচিত্র হাতে পেয়েই আমরা অনেকে আবিষ্কার করেছি, বাংলাদেশ থেকে যদি আমরা গর্ত করা শুরু করি, তাহলে আমরা চিলিতে গিয়ে পৌছাবো। এনিয়ে আমরা বড়দের কতই না যন্ত্রণা দিয়েছি, বারবার জানতে চেয়েছি কতদিন লাগবে চিলি পৌছতে? কিন্তু আসলেই কি পৃথিবীর একদিক থেকে গর্ত করে অন্যদিক দিয়ে কি বের হওয়া সম্ভব? চলুন জেনে নেই এর বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা।
![]() |
পৃথিবীর স্তর বিন্যাস |
একটি হিসাব মতে, যদি পৃথিবীর একদিকে থেকে গর্ত শুরু করা হয়, তবে পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে গিয়ে পৌছাতে প্র্রায় ২ বিলিয়ন বছর লেগে যাবে। তবে, শর্ত আছে- তা হলো, যদি আপনি গর্ত করতে পারেন। কারণ এরপর যে বিষয়ে আপনি জানবেন, তা জানার পর হয়তো পৃথিবীর সবচেয়ে আশাবাদী মানুষও পৃথিবীর একদিক থেকে গর্ত করে অন্যদিক দিয়ে বের হওয়ার স্বপ্নও দেখবে না।
পৃথিবীর স্তরগুলার কয়েকটি পর্যায়ে বিভক্ত- যথা; ১) ক্রাস্ট ২) মেন্টল ৩) আউটার কোর এবং ৪) ইনার কোর।
উপরের চিত্রের দিকে একটু ভালভাবে খেয়াল করুন। এটি পৃথিবীর অভ্যন্তরীন অংশের স্ট্রাকচার বা গঠণ। পৃৃথিবীর মোট আয়তনের মাত্র ২৯ শতাংশ বসবাসযোগ্য, যেখানে বাকি ৭১শতাংশ লাভা এবং কোর।
কোন ব্যক্তি যদি সোজাসুজি খুড়তে শুরু করে, তবে গড়ে ১০০ কিলোমিটার পর তিনি প্রথম লাভা লেয়ার মেন্টল এর সাক্ষাৎ পাবেন। এটি প্রায় ২৯০০ কিলোমিটার পুরু স্তর নিয়ে গঠিত।
৭০০ কিলোমিটার নিচে পৌছাতেপারলে তাপমাত্রা পৌছে যাবে ২০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এবং কেন্দ্রে যেতে যেতে সেটি ৬০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে চলে আসবে।
ধরে নিলাম, ব্যক্তিটি তাপরোধী কোন জ্যাকেট পড়ে নামলেন, ফলে তিনি ৬০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও বেচে আছেন ( যা এখনো কোনভাবেই সম্ভব না, অনেক প্রথম লাভায় পৌছানোর আগেই মারা যাবেন ধরে নেওয়া যায়)। কিন্তু, পৃথিবীর কেন্দ্রের গ্রাভিটি শূন্য। আপনি যখন পৃথিবীর কেন্দ্রে পৌছে যাবেন, তখন আর সেখানে দাড়িয়ে থাকতে পারবেন না।
বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যাগুলো থেকেই বোঝা যায়, বিজ্ঞানীরা কেন পৃথিবীর অভ্যন্তরীন অংশের চেয়ে মহাকাশ নিয়ে বেশি গবেষণা করেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন, পৃথিবীর একদিক থেকে গর্ত করে অন্যদিক দিয়ে কি বের হওয়া আসলে কতটা সম্ভাবপর কাজ।